কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক প্রশ্নোওর-৩
|
হাদীস
|
প্রঃ হাদীস কাকে বলে?
উঃ হাদীস ঐ সকল বাক্যাবলীর নাম যা নবী করীম (সাঃ)-এর পবিত্র কথা, কাজ এবং বরাত অনুযায়ী বর্ণিত হয়েছে।
প্রঃ 'সিহাহ্ সিত্তাহ্' সম্বন্ধে সংক্ষেপে বর্ণনা করুন।
উঃ 'সিহাহ্ সিত্তাহ্' অর্থ ছয়টি বিশুদ্ধ হাদীসের পুস্তক। বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে মুহাদ্দিসগণ (হাদীস বিশারদগণ) নিম্নোক্ত ছয়টি হাদীসের পুস্তককে অধিক প্রমাণিত ও বিশ্বাসযোগ্য বলে নির্ধারণ করেছেন। মর্যাদারক্রম অনুযায়ী হাদীসের পুস্তকগুলো হলো :
১. সহীহ্ বুখারী : সংগ্রাহক হযরত ইমাম মুহাম্মদ বিন ইসমাঈল বুখারী (রহঃ) (১৯৪-২৫৬ হিজরী)
২. সহীহ্ মুসলিম : সংগ্রাহক হযরত ইমাম মুসলিম বিন হিজাজী (রহঃ) (২০৪-২৬১ হিজরী)
(সহী বুখারী ও সহী মুসলিমকে সহীহায়ন বলা হয়। এদের উভয়ের সর্বসম্মত বর্ণনাকে বলা হয় মুত্তাফাকুন আলায়হে)
৩. জামে' তিরমিযী : সংগ্রাহক হযরত আবূ ঈসা মুহাম্মদ বিন ঈসা তিরমিযী (রাহঃ) (২০৯-২৭৯)।
৪. সুনানে আবূ দাউদ : সংগ্রাহক হযরত আবূ দাউদ সুলায়মান বিন ইশাস (রহঃ)(২০২-২৭৫ হিজরী)।
৫. সুনানে নিসাঈ : সংগ্রাহক হযরত হাফেয আহমদ বিন শাইবুন্নিসাঈ (রহঃ) (২১৫-৩০৬ হিজরী)
৬. সুনানে ইব্নে মাজাহ ্ঃ সংগ্রাহক- হযরত আবূ আব্দুল্লাহ্ মুহাম্মদ বিন ইয়াযিদ ইবনে মাজাহ কাযদীনি (রহঃ) (২০৯-২৭৩ হিজরী)
প্রঃ কোন্ সাহাবী এবং কোন্ সাহাবীয়া সর্বাপেক্ষা বেশি হাদীস বর্ণনা করেছেন?
উঃ হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) এবং হযরত আয়শা সিদ্দীকা (রাঃ)।
প্রঃ আঁ হযরত (সাঃ) হযরত ঈসা (আঃ)-এর বয়স কত বলে নিরূপণ করেছেন।
উঃ ১২০ বৎসর। এ সম্বন্ধে হাদীসটি হলঃ
(ইন্না ঈসাব্না র্মায়ামা আশা ইশরীনা ওয়া মি'আতা সানাতিন)
অর্থঃ নিশ্চয় হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আঃ) ১২০ বছর জীবিত ছিলেন (কনযুল উম্মাল, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৬০ পৃষ্ঠা)।
প্রঃ হাদীস শরীফে মূসায়ী মসীহ (আঃ) হযরত ঈসা (আঃ) এবং মুহাম্মদী মসীহ (আঃ) হযরত মির্যা গোলাম আহমদ (আঃ)-এর চেহারা যেভাবে বর্ণিত হয়েছে, তা উল্লেখ করুন।
উঃ মূসায়ী মসীহ (আঃ)-এর গায়ের রং লোহিত বর্ণ, মাথার চুল কোঁকড়ানো ও প্রশস্ত্ত বক্ষ।
মুহাম্মদী মসীহ (আঃ) সুদর্শন, তাঁর গায়ের রং গোধূম, মাথার চুল সোজা ও লম্বা (বুখারী ও কনযুল উম্মাল)
প্রঃ যে হাদীসে মসীহ ও মাহদী (আঃ) একই ব্যক্তি হবেন বলে উল্লেখ রয়েছে তা লিখুন।
উঃ লাল্ মাহ্দী ইল্লা ঈসা
অর্থঃ ঈসা (আঃ) ছাড়া মাহদী নেই (ইবনে মাজা, কিতাবুল ফীতান, বাব সিদ্দাতুজ্জামান)।
প্রঃ যে হাদীসে আঁ হযরত (সাঃ) মাহ্দী (আঃ)-কে সালাম পৌছাতে বলেছেন তা উল্লেখ করুন?
উঃ (আলা মান্ আদরাকাহু ফাল্ইয়াকরা' মিন্নী আলায়হেস্সালাম)
অর্থঃ স্মরণ রেখো, যে কেউ ইমাম মাহদী (আঃ)-এর সাক্ষাৎ পাবে সে অবশ্যই তাকে আমার সালাম পৌঁছাবে (তিবরানী 'আল্ ওয়াসিত ওয়া সাগীর)।
প্রঃ হযরত মসীহ মাওউদ (আঃ)-কে যে হাদীসে পারস্য বংশোদ্ভুত বলে উল্লেখ করা হয়েছে তা লিখুন।
উঃ যখন সূরা জুম'আর 'ওয়া আখারিনা মিনহুম লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম' আয়াত নাযিল হয়, তখন আঁ হযরত (সাঃ) হযরত সাল্মান ফারসী (রাঃ) এর কাঁধে হাত রেখে বলেন :
(লাও কানাল্ ঈমানু মু'আল্ল্লাকান্ বিস্সুরাইয়্যা লানা লাহূ রাজুলুম্ মিন্ হাউলায়ে)
অর্থঃ ঈমান যদি সুরাইয়া নক্ষত্রে উঠে যায় তাহলে এর (পারস্য বংশের) এক বা একাধিক ব্যক্তি পুনরায় একে (ঈমান) পৃথিবীতে নামিয়ে আনবেন (বুখারী, ৩য় খন্ড, কিতাবুত্ তফসীর)।
প্রঃ হাদীস শরীফে মসীহ মাওউদ (আঃ)-এর কী কী কাজের উল্লেখ রয়েছে ?
উঃ ক্রুশ ধ্বংস করা (ইয়াক্সিরুস্ সলীব), শূকর বধ করা (ইয়াকতুলুল্ খিন্যীর), যুদ্ধ রহিত করা, ইসলাম পুনর্জীবিত করা ও ইসলামের প্রাধান্য বিস্তার করা (লিইউযহিরাহ্ু 'আলাদ্দীনে কুল্লিহি), ইসলামী শরীয়ত কায়েম করা, বহিঃ ও অভ্যন্তরীণ যাবতীয় বিরোধের ন্যায়বিচারক ও মীমাংসাকারী (হাকামান আদলান,) হারানো ঈমানকে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা।
প্রঃ উম্মুল মু'মিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) খাতামান্নাবীঈনের তাৎপর্য বর্ণনায় কী বলেছেন?
উঃ (কূলূ ইন্নাহূ খাতামুল আমবিয়ায়ে ওয়া লা তাকূলূ লা নাবীয়্যা বা'দাহূ)
অর্থঃ তোমরা বলো, "আঁ হযরত (সাঃ) খাতামুল আম্বিয়া" কিন্তু একথা বলো না যে, 'তাঁর (সাঃ) পরে কোন নবী নেই
" (র্দুরে মনসূরঃ ৫ম খন্ড, ২০৪ পৃষ্ঠা ও তকমেলা মাজমাউল বেহার, ৪ খন্ড, পৃষ্ঠা ৮৫)।
প্রঃ দু'টি হাদীস উল্লেখ করুন যাতে প্রমাণিত হয় আঁ হযরত (সাঃ)-এর পর নবী আসতে পারে।
উঃ ১)
"যদি ইবরাহীম [হুযূর (সাঃ)-এর সন্তান] জীবিত থাকত তবে সে সত্য নবী হতো" (ইবনে মাজা, ১ম খন্ড, কিতাবুল জানায়েয 'তারিখ ইবনে আসাকির, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ২৯৫)।
২) 'আবূ বকর এ উম্মতের মাঝে সবার শ্রেষ্ঠ যদি ভবিষ্যতে কোন নবী হন তিনি ছাড়া (কনযুল উম্মাল, তিবরানী ও জামেউস সগীর, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১৩৭)।
|
বিবিধ
|
প্রঃ ফিকাহ্ শাস্ত্রের চারটি উৎস কি কি?
উঃ (১) কুরআন, ২) সুন্নত ও হাদীস, ৩) ইজমা' এবং ৪) কিয়াস।
প্রঃ ফিকাহ্ শাস্ত্রের চার জন ইমামের নাম লিখুন।
উঃ ১) হযরত ইমাম আবূ হানিফা (রহঃ) (৮০-১৫০ হিজরী),
২। হযরত ইমাম শাফী' (রহঃ)
(১০৫-২০৪ হিজরী),
৩। হযরত ইমাম মালিক (রহঃ) (৯৫-১৭৯ হিজরী),
৪। হযরত ইমাম আহমদ বিন মুহাম্মদ বিন হাম্বল (রহঃ) (১৬১-২৪১ হিজরী)
প্রঃ 'তাবেঈন' কাদের বলা হয়? দুই জন বিখ্যাত তাবেঈনের নাম লিখুন।
উঃ 'তাবেঈন' তাদেরই বলা হয় যারা সাহাবীদের সংস্পর্শে এসে ফয়েয (আধ্যাত্মিক কল্যাণ) লাভ করেছিলেন। হযরত হাসান বসরী (রহঃ) এবং হযরত ওয়ারেস কারণী (রহঃ) ছিলেন দু'জন বিখ্যাত তাবেঈন।
প্রঃ পর্যায়ক্রমে উম্মতে মুহাম্মদীয়াতে আর্বিভূত প্রত্যেক শতাব্দীর মুজাদ্দিদের নাম লিখুন।
উঃ হযরত উমর বিন আব্দুল আযীয (রহঃ), হযরত ইমাম শাফী' (রহঃ), হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ), হযরত আবূ শারাহ (রহঃ), এবং আবূল হাসান আশআরী (রহঃ), হযরত আবূ উবায়দুল্লাহ্ নিশাপুরী (রহঃ) এবং হযরত কাযী আবূ বকর বাক্লানী (রহঃ), হযরত ইমাম গাজ্জালী (রহঃ), হযরত সাইয়্যেদ আব্দুল কাদির জিলানী (রহঃ), হযরত ইমাম ই্বনে তাঈমীয়া (রহঃ), হযরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতি আজমীরি (রহঃ), হযরত হাফিয ইব্নে হাযর আসকালানী (রহঃ), হযরত সালিহ্ বিন্ উমর (রহঃ), হযরত আল্লামা জালাল উদ্দিন সাইউতি (রহঃ), হযরত ইমাম মুহাম্মদ তাহির গুজরাটি (রহঃ), হযরত মুজাদ্দিদ আলফে সানী আহমদ সরহিন্দী (রহঃ), হযরত শাহ্ ওয়ালিউল্লাহ্ মুহাদ্দিস দেহলভী (রহঃ), হযরত সাঈদ আহমদ বেরেলভী (রহঃ), ('হুজাজুল কিরামা' পুস্তক দ্রষ্টব্য], মুজাদ্দিদে আযম হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আঃ), প্রতিশ্রুত মসীহ্ ও মাহদী।
প্রঃ মক্কার বাইরে প্রথম মোবালিস্ন্লগ কে ?
উঃ হযরত মুসায়েব (রাঃ)
প্রঃ বিখ্যাত মুসলমান চিকিৎসক, বৈজ্ঞানিক এবং দার্শনিকের নাম লিখূন।
উঃ বু আলী সিনা (চিকিৎসক,) জাবির ইব্নে হাইয়ান (বৈজ্ঞানিক) এবং ইব্নে রুশ্দ (দার্শনিক)
প্রঃ 'জান্নাতুল বাকী 'কি?
উঃ মদীনার প্রসিদ্ধ কবরস্থান যেখানে আঁ হযরত (সাঃ)-এর পবিত্র স্ত্রীগণ, সাহাবী এবং রসূল (সাঃ)-এর আহলে বায়েত (বংশধর) সমাহিত আছেন।
প্রঃ উমাইয়া বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে? এ বংশের রাজত্ব কাল কত ?
উঃ হযরত আমীর মুয়াবিয়া বিন আবূ সুফিয়ান (রাঃ) কর্তৃক হিজরী ৪১ সন মোতাবেক ৬৬১ খৃষ্ঠাব্দে বনী উমাইয়াদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় এবং হিজীর ১৩২ মোতাবেক ৭৪৯ খৃস্টাব্দে দ্বিতীয় র্মাওয়ানের সময় এদের পতন হয়।
প্রঃ আব্বাসীয় বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে? এ বংশের রাজত্বকাল কত?
উঃ আবূ আব্বাস আব্দুল্লাহ্ বিন সাফ্ফাহ্ কর্তৃক হিজরী ১৩২ সন মোতাবেক ৭৪৯ খৃষ্টাব্দে আব্বাসীয় বংশের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় এবং হিজরী ৬৫৬ মোতাবেক ১২৫০ খৃষ্টাব্দে হালাকু খান কর্তৃক শেষ বাদশাহ্ মু'তাসিম বিল্লাহ্ নিহত হলে এ বংশের রাজত্বের পতন ঘটে।
প্রঃ মিশর, পারস্য, স্পেন ও সিন্ধু বিজেতাগণের নাম লিখুন।
উঃ মিশর- হযরত আমর ইবনুল 'আস (রাঃ), পারস্য- হযরত সা'দ বিন আবি আক্কাস (রাঃ), স্পেন-তারিক বিন যিয়াদ এবং সিন্ধু-মুহাম্মদ বিন কাসিম।
প্রঃ গায়েবানা জানাযার নামায কখন থেকে শুরু হয়?
উঃ আবিসিনিয়ার বাদশাহ্ নাজ্জাশীর মৃত্যুর পর নবী করীম (সাঃ) তাঁর মরদেহের অনুপস্থিতিতে জানাযার নামায আদায় করেন, তখন থেকেই গায়েবানা জানাযার নামাযের সূত্রপাত হয়।
তুলনামূলক ধর্মীয় শিক্ষা
প্রঃ ইহূদী ধর্মের প্রবর্তক কে?
উঃ হযরত মূসা (আঃ)। তিনি বনী ইসরাঈলের বিখ্যাত নবী ছিলেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর ৫০০ বছর পরে এবং হযরত ঈসা (আঃ)-এর ১৪০০ বছর পূর্বে তিনি আবির্ভূত হন।
প্রঃ হযরত মূসা (আঃ) কোথায় আল্লাহ্তাআলার প্রত্যাদেশ পান?
উঃ মিশরে 'সিনাই' পর্বতে।
প্রঃ 'সাব্বাথ্' কি?
উঃ ইহূদীদের কাছে সপ্তাহের গুরুত্বপূর্ণ দিন হ'ল শনিবার। শনিবারকে 'সাব্বাথ' বলা হয়। 'সাব্বাথ' অর্থ বিরতি বা বিশ্রাম।
প্রঃ ইহুদীদের জন্যে হযরত মূসা (আঃ) কি আসমানী কিতাব পেয়েছিলেন?
উঃ ইহূদীদের জন্যে হযরত মূসা (আঃ) তওরাত কিতাব পেয়েছিলেন। তওরাত অর্থ শিক্ষা।
প্রঃ হযরত মূসা (আঃ)-এর জন্মের সময় কে মিশরের শাসনকর্তা ছিলেন?
উঃ ফেরাউন রামেসিস দ্বিতীয় সেই সময়ে মিশরের শাসনকর্তা ছিলেন।
প্রঃ ফেরাউন সম্বন্ধে কি জানেন?
উঃ নীল নদের উপত্যকা ও আলেকজান্দ্রিয়ার তৎকালীন সম্রাটদেরকে ফেরাউন বলা হ'ত।
প্রঃ হযরত মূসা (আঃ) কোন্ ফেরাউনের সময়ে মিশর থেকে হিজরত করেছিলেন?
উঃ মেরেনেপতাহ্ দ্বিতীয় ফেরাউন-এর শাসনামলে হযরত মূসা (আঃ) বনী ইসরাঈলকে নিয়ে মিশর থেকে কেনানে হিজরত করেন।
প্রঃ যখন হযরত মূসা (আঃ) ও তাঁর অনুসারীরা একত্রে মিশর হতে হিজরত করেছিলেন, তখন ফেরাউন মেরেনেপতাহ্, যে হযরত মূসা (আঃ)-এর পিছু পিছু যাচ্ছিল, তার কি পরিণতি ঘটেছিল?
উঃ হযরত মূসা (আঃ) ও তাঁর অনুসারীরা যখন কেনানের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁদের পিছনে ধাবমান ফেরাউন সঙ্গী-সাথীসহ লোহিত সাগরে নিমজ্জিত হয়েছিল।
প্রঃ যীশু খৃষ্টের [হযরত ঈসা (আঃ) ] অনুসারীদের কি বলা হয়?
উঃ খৃষ্টান বলা হয়।
প্রঃ তাদেরকে খৃষ্টান নাম কে দিয়েছিলো?
উঃ যীশুখৃষ্ট মারা যাবার অনেকদিন পরে তারা নিজেদের জন্য খৃষ্টান নাম পসন্দ করে।
প্রঃ যীশু কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উঃ দু'হাজার বছর পূর্বে প্যালেষ্টাইনের নাযারাথ হতে সত্তর মাইল দূরে বেথেলহেমে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রঃ যীশুর মায়ের নাম কি?
উঃ তাঁর মায়ের নাম মেরী (হযরত মরিয়ম)।
প্রঃ যীশুর পিতা সম্বন্ধে কি জানেন?
উঃ যীশুর কোন পিতা ছিল না। তিনি বিনা পিতায় আল্লাহ্র কুদরতে জন্ম গ্রহণ করেন।
প্রঃ পুরুষের মাধ্যম ছাড়া কোন শিশুর জন্ম নেয়া কি সম্ভব?
উঃ হ্যাঁ, বাইবেলে এ ধরনের ঘটনার বর্ণনা আছে। তাছাড়া বিনা পিতায় কিছু শিশুর জন্ম সম্ভব হয়েছে এ রকম প্রমাণ চিকিৎসাবিদ্যা বিষয়ক সাময়িকীতে দেখা যায়, যদিও এ খুবই দুর্লভ ঘটনা।
প্রঃ যীশু কি খোদার পুত্র ছিলেন?
উঃ মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে, যীশু আল্লাহ্র নবী ছিলেন, আল্লাহ্র পুত্র ছিলেন না। আল্লাহ্র কোন পুত্র বা কন্যার প্রয়োজন নেই।
প্রঃ বাইবেলে কি কেবল যীশুর জন্যে 'খোদার পুত্র ' কথাটিই ব্যবহৃত হয়েছে?
উঃ 'খোদার পুত্র ' কথাটি বাইবেলে শুধুমাত্র যীশুর জন্য ব্যবহৃত হয় নি বরং অন্যান্য কয়েকজন ব্যক্তির জন্যও ব্যবহৃত হয়েছে। আসলে এটি রূপকার্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
প্রঃ বাইবেল থেকে দু'টি দৃষ্টান্ত দিন যেখানে যীশু ছাড়া অন্য কারো জন্যে 'খোদার পুত্র' কথাটি ব্যবহৃত হয়েছে।
উঃ
"ইসমাঈল আমার প্রথম ঔরসজাত সন্তান (এক্সেডাস-৪ : ২২) "আদম খোদার পুত্র" (লুক-৩ :
৩৮)।
প্রঃ যীশুর জন্ম তারিখ সম্বন্ধে কুরআন মজীদে কী বর্ণিত হয়েছে?
উঃ যীশুর জন্ম সম্বন্ধে পবিত্র কুরআনে কোন সুনির্দিষ্ট তারিখ বর্ণিত হয় নি। কিন্তু বলা হয়েছে, যীশু যে সময়ে জন্মগ্রহণ করেন তখন জুডেই নগরীতে খেজুর গাছে তাজা খেজুর পাওয়া যাচ্ছিল। এটা নির্দেশ করে যে, যীশু আগষ্ট অথবা সেপ্টেম্বরে কোন এক সময়ে জন্ম গ্রহণ করেন। সুতরাং ২৫শে ডিসেম্বর যীশুর জন্ম দিন নয় যদিও সে দিনটি সারা পৃথিবীতে তাঁর জন্ম দিবস হিসেবে উদ্যাপিত হচ্ছে।
প্রঃ যীশু কি নুতন শরীয়ত এনেছিলেন?
উঃ না, তিনি কোন শরীয়ত আনে নি। তিনি মূসায়ী শরীয়ত অনুসরণ করেছিলেন। যেমন তিনি বলেছেন, "ভেবো না আমি নবীদের শরীয়ত রদ করতে এসেছি। আমি রদ করতে আসি নি বরং সম্পূর্র্ণ করতে এসেছি" (মথি-৫ :
১৭)।
প্রঃ বেদ সম্বন্ধে কি জানেন?
উঃ বেদ হিন্দুদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ। বেদের চারটি ভাগ, এ ভাগগুলোর নাম হল ঋগবেদ, ঋজুবেদ, শামবেদ ও অথর্ববেদ। এক সময়ে বেদ যখন বিশুদ্ধ অবস্থায় ছিল তখন তাতে হিন্দুদের জন্য ঐশী নির্দেশনা ছিল কিন্তু পরবর্তীতে বেদে এত প্রক্ষেপ বা পরিবর্তন আনা হয়েছে যে, এখন এগুলোর বৈধতা সন্দেহযুক্ত হয়ে গেছে।
প্রঃ কৃষ্ণ সম্বন্ধে কি জানেন?
উঃ তিনি হিন্দুদের একজন মহান অবতার বা নবী ছিলেন।
প্রঃ কে নিম্নলিখিত ইলহাম পেয়েছিলেন? "হে কৃষ্ণ রূদ্র গোপাল! তোমার মহিমা গীতায় লিপিবদ্ধ আছে"।
উঃ প্রতিশ্রুত মসীহ্ হযরত আহমদ (আঃ) উর্দূতে এ ইলহাম পেয়েছিলেন। যেমন তিনি দাবী করেছেন, তিনি হিন্দুদের জন্য কৃষ্ণের মত একজন অবতার, মুসলমানদের জন্য প্রতিশ্রুতি মাহদী ও খৃষ্টানদের জন্য প্রতিশ্রুতি মসীহ্।
প্রঃ মসীহ্ মাওউদ (আঃ)-এর কয়েকটি বইয়ের নাম লিখুন যেগুলোতে তিনি হিন্দুদেরকে বিশেষভাবে সম্বোধন করেছেন।
উঃ ১) সুরমা চশমায়ে আরিয়া (উর্দূ)
২) আরিয়া ধরম (উর্দূ)
৩) শাহানায়ে হক (উর্দূ)
প্রঃ 'গ্রন্থ সাহেব' সম্বন্ধে কি জানেন?
উঃ গ্রন্থ সাহেব শিখদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ। এটি গুরুনানকের বাণী ও বক্তৃতার সংকলন। এতে লোকদেরকে ইসলামের মৌলিক কর্তব্যসমূহ, যেমন -দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায, রোযা, যাকাত এবং মক্কা গিয়ে হজ্জ পালন করার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে। যারা এ দায়িত্বসমূহ পালন করতে ব্যর্থ হবে তাদের জন্য রয়েছে গুরুনানকের কঠোর তিরস্কার।
প্রঃ চোলা সম্বন্ধে কি জানেন?
উঃ চোলা হ'ল গুরুনানকের পবিত্র পোশাক। শিখরা চোলাকে তাদের গুরুর পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে গণ্য করে। এ পোশাকে পবিত্র কুরআনের অনেক আয়াত আর ইসলামী কলেমা লিখিত আছে।
প্রঃ চোলাতে কি লিখিত ছিল তা দেখার জন্য হযরত আহমদ (আঃ) কতজন লোক পাঠিয়েছিলেন?
উঃ হযরত আহমদ (আঃ) চারজনকে পাঠিয়েছিলেন। তাঁরা হলেন (১) মির্যা ইয়াকুব বেগ, ২) মুন্সী তাজউদ্দিন, ৩) খাজা কামাল উদ্দীন এবং ৪) মিঞা আব্দুর রহমান।
প্রঃ এ প্রতিনিধিরা কি বিবরণী দিয়েছেন?
উঃ তাঁরা হযরত আহমদ (আঃ)-এর নিকট বিবরণ দিয়েছেন যে, চোলায় কুরআনের ক্ষুদ্রতম সূরা ইখলাস, আয়াতুল কুরসী, এবং সূরা আল্ ইমরানের ২০ নং আয়াত ও কলেমা লিখিত আছে।
প্রঃ হযরত আহমদ (আঃ) কখন নিজে স্বয়ং চোলাটি দেখতে গিয়েছিলেন?
উঃ ডেরা বাবা নানক নামক স্থানে হযরত আহমদ (আঃ) নিজে স্বয়ং চোলা দেখতে গিয়েছিলেন ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ১৮৯৫ তারিখে।
প্রঃ হিন্দুরা গুরুনানকের বিরুদ্ধে যে আপত্তি উত্থাপন করেছিলো তা খন্ডন করতে গিয়ে হযরত মসীহ্ মাওউদ (আঃ) কোন্ বই লিখেছিলেন?
উঃ 'সৎ বচন' নামক বই লিখেছিলেন।
প্রঃ কেমন করে প্রমাণ করবেন যে, গুরু নানক একজন মুসলমান সাধক ছিলেন?
উঃ শিখ ধর্ম গ্রন্থ হতে আমরা জানতে পারি যে, বাবা নানক একদল মুসলিম সাধকদের সাথে সর্বদা থাকতেন এবং বিভিন্ন জায়গায় চিল্লায় (মুসলমানদের আধ্যাত্মিক শোধনপ্রণালী ) গিয়েছিলেন। তিনি মুসলমানদের জামাতে নামাযে যোগদান করতেন। এছাড়া তিনি মক্কায় গিয়ে হজ্জ করেছিলেন।

No comments