স্টিভ জবস
অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রযুক্তি দিকপাল স্টিভ জবস শুধু সৃষ্টি নয়,
বাণীর জন্যও বিখ্যাত। গত ২৫ বছরে তার অনেক কথা এখন প্রবাদবাক্যের মতো, তার
দর্শনও কিংবদন্তিতুল্য হয়ে রয়েছে।নিচে তার বিভিন্ন সাক্ষাত্কার থেকে মূল
উক্তি বা কথা গুলো দেওয়া হল ...
মৃত্যুর কাছে সবই ম্লান…
-------------------
‘যেকোনো সময় মরে যেতে পারি। এ চিন্তাই আমাকে জীবনের বড় বড় সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে। বাহ্যিক সব আকাঙ্ক্ষা, অহঙ্কার, লজ্জার ভয়, হেরে যাওয়ার ভয়— সবই তুচ্ছ হয়ে যায় মৃত্যুর মুখে, থেকে যায় শুধু যা সত্যিকারের প্রয়োজন।’ স্ট্যানফোর্ডে ২০০৫ সালে দেয়া উদ্বোধনী বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আমরা কাঁদতে শুরু করেছিলাম…
-------------------
‘আর কোনো কিছুর জন্য এত খেটেছি বলে মনে পড়ে না। তবে আমার জীবনের সুন্দরতম মুহূর্তগুলো ম্যাকিনটশ নিয়ে কাজ করার সময়। যারাই এটি নিয়ে কাজ করেছে, তারাই এ কথা বলবে। শেষ দিকে কেউ আর এটিকে ছাড়তে চাইছিল না। মনে হচ্ছিল, একবার আমাদের হাত থেকে বেরিয়ে গেলে আর কখনো তা আমাদের থাকবে না।’
‘শেয়ারহোল্ডারদের সামনে যখন উপস্থাপন করা হলো, সবাই তখন বিস্ময়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী পাঁচ মিনিট শুধু প্রশংসার। ম্যাকিনটোশ দলের সদস্যরা সামনের সারিতেই বসা ছিল। আমরা কেউই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, আমরা কাজটি শেষ করেছি। আমরা হু হু করে কেঁদেছিলাম।’ ম্যাকিনটোশ উদ্বোধনের পর ১৯৮৫ সালে প্লেবয় ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাত্কার।
ক্রেতাদের সন্তুষ্টিই জীবনীশক্তি…
--------------------------------------
‘এমন কোনো দিন নেই, যেদিন পৃথিবীর দূরতম কোণ থেকে একজন ক্রেতা তার সদ্য কেনা আইপ্যাড নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে আমাকে মেইল করে না। তারা বলে, কীভাবে এই যন্ত্রটি তাদের জীবনকে বদলে দিচ্ছে। আর এটাই আমার সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। পাঁচ বছর আগে যখন ক্যান্সার ধরা পড়েছিল, ১০ বছর আগে যখন সব দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। তখন এই ক্রেতারাই আমাকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা, বেঁচে থাকার প্রেরণা দিয়েছে। আগামী পাঁচ বছর তাদের উত্সাহেই পথ চলব’। ২০১০ সালে অলথিংস ডি সভায়।
আমরা শুধু সেরাটা গড়তে চেয়েছিলাম….
--------------------------------------
‘কোটি কোটি ম্যাক (ম্যাকিনটোশ কম্পিউটার) হয়তো বিক্রি হবে, কিন্তু আমরা অন্য কারও জন্য এটা তৈরি করিনি। আমাদের নিজেদের জন্য ছিল এই যন্ত্রটির জন্ম। আমরা এক দল মানুষ বুঝতে চেয়েছিলাম এটি দারুণ কিছু কি না। আমরা বাইরে গিয়ে বাজার গবেষণা করিনি। আমরা সেটাই গড়তে চেয়েছিলাম, যা গড়তে পারি।
আপনি যদি কাঠমিস্ত্রি হন তাহলে আপনার আসবাবের পেছন দিকেও এক টুকরো সুন্দর কাঠ লাগাতে চাইবেন, হোক সে দিকটা থাকে দৃষ্টির আড়ালে, তবুও। রাত্রে একটা ভালো ঘুমের জন্য নান্দনিকতা, মানের সঙ্গে আপস করলে তো চলবে না’। প্লেবয় ম্যাগাজিনকে ১৯৮৫ সালে দেয়া সাক্ষাত্কার।
ইচ্ছা থাকলে পর্বতও সরানো যায়…
--------------------------------------
‘আমার মন্ত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে— মনোযোগ ও সারল্য। জটিল থেকেও জটিলতর হতে পারে সারল্য। নিজের চিন্তাকে সহজ-সরল করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এর ফল পাওয়া যাবেই। আর তখনই পর্বতপ্রমাণ বাধাও ডিঙ্গানো যায়’। ১৯৯৮ সালে বিজনেস উইককে দেয়া সাক্ষাত্কারে নিজের চিন্তাধারা সম্পর্কে।
ধনী হওয়ার চেয়ে কিছু করার আনন্দই আসল…
---------------------------------------------------------
‘বিশ্বের সেরা ধনী হওয়া আমার কাছে মুখ্য বিষয় নয়, …বরঞ্চ রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময় নিজেকে যেন বলতে পারি যে, হ্যাঁ সত্যিই আমি দারুণ কিছু করেছি’। নিজের কাজ নিয়ে ১৯৯৩ সালে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে।
জীবনের মূল্য বোঝাবে ইন্টারনেট…
--------------------------------------
‘নতুন নতুন কোম্পানি প্রতিষ্ঠা ইন্টারনেটের মূল সমস্যা নয়, বরং বেশির ভাগ মানুষ এর বাইরে আছে সেটাই চিন্তার বিষয়। অনেক সময় আছে যখন হতাশা আর কষ্ট এসে ঘিরে ধরে, যখন আপনি হয়তো কাউকে চাকরিচ্যুত করছেন বা কোনো কাজ পরিত্যাগ করছেন; সে সময়ই আপনি আপনার মূল্য বুঝতে পারবেন, জানতে পারবেন আপনার নিজেকে।
এসব লোক যখন অনেক সম্পদ কামিয়ে ইন্টারনেট ছেড়ে চলে যাচ্ছে, তখনই তারা তাদের অদেখা জীবনের অনেক অমূল্য অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এটা (ইন্টারনেট) না থাকলে তারা তাদের অর্জিত সম্পদের মূল্য বুঝতে পারবে না’। ২০০০ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনকে ইন্টারনেট নিয়ে দেয়া সাক্ষাত্কারে।
নকশা অনুধাবনের বিষয়, গিলে খাওয়ার জন্য নয়…
---------------------------------------------------------
‘নকশা একটা মজার শব্দ। কিছু মানুষ নকশা বলতে বোঝে জিনিসটা দেখতে কেমন হবে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে জিনিসটা কেমন কাজ করে সেটাই হলো নকশা। ম্যাকের বহিরাবরণ নকশার একটা অংশ। তা-ই বলে মূল অংশ নয়। প্রাথমিকভাবে এটি কেমন কাজ করে সেটিই ছিল তার নকশা। কোনো কিছুর কার্যকর নকশা করতে হলে আপনাকে বস্তুটির অবস্থা বুঝতে হবে। আপনাকে নিবেদিতভাবে বিষয়টি অনুধাবন করতে হবে, চিবিয়ে রস বের করতে হবে; গিলে ফেললে হবে না। বেশির ভাগ মানুষ গিলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে’। ১৯৯৪ সালে উইয়ার্ড ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাত্কারে।
‘বেশির ভাগ মানুষ ইন্টেরিয়র ডেকোরেটিংয়েই নকশার সার্থকতা খোঁজে। পর্দার কাপড় আর আরামদায়ক সোফায় তারা নকশার উত্কর্ষ খুঁজে পান। আমার কাছে মানবসৃষ্ট বস্তুগুলোর মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করাই নকশার সার্থকতা’। নকশা নিয়ে নিজের ধারণা নিয়ে ২০০০ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাত্কারে।
অ্যাপলে ফিরে আসা…
--------------------------------------
‘যখন শিল্পটা কোমায় চলে গিয়েছিল তখনই আমার ফিরে আসা। অবস্থাটা ছিল ’৭০-এর দশকে ডেট্রয়েটের মতো। আমেরিকান গাড়িশিল্পের ভয়াবহ দুর্দিন যাচ্ছিল তখন’। ফরচুন ম্যাগাজিন, ২০০০।
প্রত্যাখ্যানেই উদ্ভাবন…
-------------------
‘উদ্ভাবনের চিন্তা হাটে-বাজারে দাঁড়িয়েও আসতে পারে, রাত-দুপুরে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলার সময়ও আসতে পারে। সেটা নিয়ে জনাদশেক বন্ধু, সহকর্মী আলোচনায় বসে যান, বের হয়ে আসবে চিন্তায় কী খুঁত আছে। এটা সবসময় হুটহাট আলোচনা যখন আপনার মাথায় দারুণ জিনিসটা উদ্ভাবনের চিন্তা মাথায় আসবে।
হাজারবার হাজারখানেক বিষয়কে প্রত্যাখ্যান করে শেষ পর্যন্ত সঠিক সিদ্ধান্তটা নেয়া সম্ভব। আমরা সবসময়ই বাজারে নতুন পণ্য আনতে চাই। আগে তো চিন্তার অপ্রয়োজনীয় অংশগুলো বাদ দিয়ে দিতে হবে’। বিজনেসউইকে ২০০৪ সালে দেয়া সাক্ষাত্কার।
যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নিজস্ব কম্পিউটার…
---------------------------------------------------------
‘বেশির ভাগ মানুষ দেশব্যাপী যোগাযোগের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতেই কম্পিউটার কেনে। আমরা এখন একটা যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। টেলিযোগাযোগ যেভাবে বিশ্বকে বদলে দিয়েছিল, কম্পিউটার সে ভূমিকা আরও ব্যাপকভাবে নিতে যাচ্ছে।’ প্লেবয় ম্যাগাজিনকে ১৯৮৫ সালে কম্পিউটারের ভূমিকা সম্পর্কে।
ডেস্কটপ কম্পিউটারের যুগ শেষ…
--------------------------------------
‘যদি নতুন কোনো উদ্ভাবন না আসে, তাহলে ডেস্কটপ কম্পিউটার শিল্প শেষ হয়ে যাবে। মাইক্রোসফট এখন সামান্য কিছু উদ্ভাবন নিয়ে ধুঁকছে। আইবিএম মাইক্রোপ্রসেসর তৈরির আগে বেশকিছু উদ্ভাবন করেছিল। আগামী ১০ বছর বা আগামী আরও কয়েক দশক ডেস্কটপ কম্পিউটার ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকতে পারে। মৌলিক কিছু উদ্ভাবন না হলে এ শিল্প মৃত্যুবরণ করবে।’ উইয়ার্ড ম্যাগাজিন, ১৯৯৬।
নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে…
--------------------------------------
‘দুটি বিন্দুকে সামনের দিকে তাকিয়ে জোড়া লাগানো সম্ভব নয়। পেছনের দিকে তাকিয়েই তা করা যায়। আপনাকে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, বিন্দুগুলো ভবিষ্যতের কোনো একসময় মিলে যাবে। আপনাকে কিছু জিনিসে বিশ্বাস করতেই হবে— নিজের ক্ষমতা, গন্তব্য, জীবন, কর্ম। এ বিশ্বাস কোনোদিন আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমার জীবন বদলে দিয়েছে’। স্ট্যানফোর্ডের উদ্বোধনী বক্তব্যে।
নিজের কাজকে ভালোবাসুন…
--------------------------------------
‘আপনার কাজই আপনার জীবনের বড় অংশজুড়ে আছে। আর সত্যিকারভাবে সন্তুষ্টি পেতে হলে নিজের কাজগুলোকে বড় করে দেখতে হবে। আর এর জন্য নিজের কাজকে ভালোবাসতে হবে। যদি না পেয়ে থাকেন, খুঁজতে থাকুন। বসে থাকবেন না। যখন খুঁজে পাবেন, আপনার মনই তা বলে দেবে। আর মহান সম্পর্কগুলোর মতো দিন দিন সে কাজ আরও ভালো হতে থাকে। তাই বসে থাকবেন না, আপনার মনের মতো কাজ খুঁজে নিন।’
মৃত্যুর কাছে সবই ম্লান…
-------------------
‘যেকোনো সময় মরে যেতে পারি। এ চিন্তাই আমাকে জীবনের বড় বড় সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে। বাহ্যিক সব আকাঙ্ক্ষা, অহঙ্কার, লজ্জার ভয়, হেরে যাওয়ার ভয়— সবই তুচ্ছ হয়ে যায় মৃত্যুর মুখে, থেকে যায় শুধু যা সত্যিকারের প্রয়োজন।’ স্ট্যানফোর্ডে ২০০৫ সালে দেয়া উদ্বোধনী বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আমরা কাঁদতে শুরু করেছিলাম…
-------------------
‘আর কোনো কিছুর জন্য এত খেটেছি বলে মনে পড়ে না। তবে আমার জীবনের সুন্দরতম মুহূর্তগুলো ম্যাকিনটশ নিয়ে কাজ করার সময়। যারাই এটি নিয়ে কাজ করেছে, তারাই এ কথা বলবে। শেষ দিকে কেউ আর এটিকে ছাড়তে চাইছিল না। মনে হচ্ছিল, একবার আমাদের হাত থেকে বেরিয়ে গেলে আর কখনো তা আমাদের থাকবে না।’
‘শেয়ারহোল্ডারদের সামনে যখন উপস্থাপন করা হলো, সবাই তখন বিস্ময়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী পাঁচ মিনিট শুধু প্রশংসার। ম্যাকিনটোশ দলের সদস্যরা সামনের সারিতেই বসা ছিল। আমরা কেউই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, আমরা কাজটি শেষ করেছি। আমরা হু হু করে কেঁদেছিলাম।’ ম্যাকিনটোশ উদ্বোধনের পর ১৯৮৫ সালে প্লেবয় ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাত্কার।
ক্রেতাদের সন্তুষ্টিই জীবনীশক্তি…
--------------------------------------
‘এমন কোনো দিন নেই, যেদিন পৃথিবীর দূরতম কোণ থেকে একজন ক্রেতা তার সদ্য কেনা আইপ্যাড নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে আমাকে মেইল করে না। তারা বলে, কীভাবে এই যন্ত্রটি তাদের জীবনকে বদলে দিচ্ছে। আর এটাই আমার সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। পাঁচ বছর আগে যখন ক্যান্সার ধরা পড়েছিল, ১০ বছর আগে যখন সব দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। তখন এই ক্রেতারাই আমাকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা, বেঁচে থাকার প্রেরণা দিয়েছে। আগামী পাঁচ বছর তাদের উত্সাহেই পথ চলব’। ২০১০ সালে অলথিংস ডি সভায়।
আমরা শুধু সেরাটা গড়তে চেয়েছিলাম….
--------------------------------------
‘কোটি কোটি ম্যাক (ম্যাকিনটোশ কম্পিউটার) হয়তো বিক্রি হবে, কিন্তু আমরা অন্য কারও জন্য এটা তৈরি করিনি। আমাদের নিজেদের জন্য ছিল এই যন্ত্রটির জন্ম। আমরা এক দল মানুষ বুঝতে চেয়েছিলাম এটি দারুণ কিছু কি না। আমরা বাইরে গিয়ে বাজার গবেষণা করিনি। আমরা সেটাই গড়তে চেয়েছিলাম, যা গড়তে পারি।
আপনি যদি কাঠমিস্ত্রি হন তাহলে আপনার আসবাবের পেছন দিকেও এক টুকরো সুন্দর কাঠ লাগাতে চাইবেন, হোক সে দিকটা থাকে দৃষ্টির আড়ালে, তবুও। রাত্রে একটা ভালো ঘুমের জন্য নান্দনিকতা, মানের সঙ্গে আপস করলে তো চলবে না’। প্লেবয় ম্যাগাজিনকে ১৯৮৫ সালে দেয়া সাক্ষাত্কার।
ইচ্ছা থাকলে পর্বতও সরানো যায়…
--------------------------------------
‘আমার মন্ত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে— মনোযোগ ও সারল্য। জটিল থেকেও জটিলতর হতে পারে সারল্য। নিজের চিন্তাকে সহজ-সরল করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এর ফল পাওয়া যাবেই। আর তখনই পর্বতপ্রমাণ বাধাও ডিঙ্গানো যায়’। ১৯৯৮ সালে বিজনেস উইককে দেয়া সাক্ষাত্কারে নিজের চিন্তাধারা সম্পর্কে।
ধনী হওয়ার চেয়ে কিছু করার আনন্দই আসল…
---------------------------------------------------------
‘বিশ্বের সেরা ধনী হওয়া আমার কাছে মুখ্য বিষয় নয়, …বরঞ্চ রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময় নিজেকে যেন বলতে পারি যে, হ্যাঁ সত্যিই আমি দারুণ কিছু করেছি’। নিজের কাজ নিয়ে ১৯৯৩ সালে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে।
জীবনের মূল্য বোঝাবে ইন্টারনেট…
--------------------------------------
‘নতুন নতুন কোম্পানি প্রতিষ্ঠা ইন্টারনেটের মূল সমস্যা নয়, বরং বেশির ভাগ মানুষ এর বাইরে আছে সেটাই চিন্তার বিষয়। অনেক সময় আছে যখন হতাশা আর কষ্ট এসে ঘিরে ধরে, যখন আপনি হয়তো কাউকে চাকরিচ্যুত করছেন বা কোনো কাজ পরিত্যাগ করছেন; সে সময়ই আপনি আপনার মূল্য বুঝতে পারবেন, জানতে পারবেন আপনার নিজেকে।
এসব লোক যখন অনেক সম্পদ কামিয়ে ইন্টারনেট ছেড়ে চলে যাচ্ছে, তখনই তারা তাদের অদেখা জীবনের অনেক অমূল্য অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এটা (ইন্টারনেট) না থাকলে তারা তাদের অর্জিত সম্পদের মূল্য বুঝতে পারবে না’। ২০০০ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনকে ইন্টারনেট নিয়ে দেয়া সাক্ষাত্কারে।
নকশা অনুধাবনের বিষয়, গিলে খাওয়ার জন্য নয়…
---------------------------------------------------------
‘নকশা একটা মজার শব্দ। কিছু মানুষ নকশা বলতে বোঝে জিনিসটা দেখতে কেমন হবে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে জিনিসটা কেমন কাজ করে সেটাই হলো নকশা। ম্যাকের বহিরাবরণ নকশার একটা অংশ। তা-ই বলে মূল অংশ নয়। প্রাথমিকভাবে এটি কেমন কাজ করে সেটিই ছিল তার নকশা। কোনো কিছুর কার্যকর নকশা করতে হলে আপনাকে বস্তুটির অবস্থা বুঝতে হবে। আপনাকে নিবেদিতভাবে বিষয়টি অনুধাবন করতে হবে, চিবিয়ে রস বের করতে হবে; গিলে ফেললে হবে না। বেশির ভাগ মানুষ গিলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে’। ১৯৯৪ সালে উইয়ার্ড ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাত্কারে।
‘বেশির ভাগ মানুষ ইন্টেরিয়র ডেকোরেটিংয়েই নকশার সার্থকতা খোঁজে। পর্দার কাপড় আর আরামদায়ক সোফায় তারা নকশার উত্কর্ষ খুঁজে পান। আমার কাছে মানবসৃষ্ট বস্তুগুলোর মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করাই নকশার সার্থকতা’। নকশা নিয়ে নিজের ধারণা নিয়ে ২০০০ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাত্কারে।
অ্যাপলে ফিরে আসা…
--------------------------------------
‘যখন শিল্পটা কোমায় চলে গিয়েছিল তখনই আমার ফিরে আসা। অবস্থাটা ছিল ’৭০-এর দশকে ডেট্রয়েটের মতো। আমেরিকান গাড়িশিল্পের ভয়াবহ দুর্দিন যাচ্ছিল তখন’। ফরচুন ম্যাগাজিন, ২০০০।
প্রত্যাখ্যানেই উদ্ভাবন…
-------------------
‘উদ্ভাবনের চিন্তা হাটে-বাজারে দাঁড়িয়েও আসতে পারে, রাত-দুপুরে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলার সময়ও আসতে পারে। সেটা নিয়ে জনাদশেক বন্ধু, সহকর্মী আলোচনায় বসে যান, বের হয়ে আসবে চিন্তায় কী খুঁত আছে। এটা সবসময় হুটহাট আলোচনা যখন আপনার মাথায় দারুণ জিনিসটা উদ্ভাবনের চিন্তা মাথায় আসবে।
হাজারবার হাজারখানেক বিষয়কে প্রত্যাখ্যান করে শেষ পর্যন্ত সঠিক সিদ্ধান্তটা নেয়া সম্ভব। আমরা সবসময়ই বাজারে নতুন পণ্য আনতে চাই। আগে তো চিন্তার অপ্রয়োজনীয় অংশগুলো বাদ দিয়ে দিতে হবে’। বিজনেসউইকে ২০০৪ সালে দেয়া সাক্ষাত্কার।
যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নিজস্ব কম্পিউটার…
---------------------------------------------------------
‘বেশির ভাগ মানুষ দেশব্যাপী যোগাযোগের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতেই কম্পিউটার কেনে। আমরা এখন একটা যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। টেলিযোগাযোগ যেভাবে বিশ্বকে বদলে দিয়েছিল, কম্পিউটার সে ভূমিকা আরও ব্যাপকভাবে নিতে যাচ্ছে।’ প্লেবয় ম্যাগাজিনকে ১৯৮৫ সালে কম্পিউটারের ভূমিকা সম্পর্কে।
ডেস্কটপ কম্পিউটারের যুগ শেষ…
--------------------------------------
‘যদি নতুন কোনো উদ্ভাবন না আসে, তাহলে ডেস্কটপ কম্পিউটার শিল্প শেষ হয়ে যাবে। মাইক্রোসফট এখন সামান্য কিছু উদ্ভাবন নিয়ে ধুঁকছে। আইবিএম মাইক্রোপ্রসেসর তৈরির আগে বেশকিছু উদ্ভাবন করেছিল। আগামী ১০ বছর বা আগামী আরও কয়েক দশক ডেস্কটপ কম্পিউটার ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকতে পারে। মৌলিক কিছু উদ্ভাবন না হলে এ শিল্প মৃত্যুবরণ করবে।’ উইয়ার্ড ম্যাগাজিন, ১৯৯৬।
নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে…
--------------------------------------
‘দুটি বিন্দুকে সামনের দিকে তাকিয়ে জোড়া লাগানো সম্ভব নয়। পেছনের দিকে তাকিয়েই তা করা যায়। আপনাকে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, বিন্দুগুলো ভবিষ্যতের কোনো একসময় মিলে যাবে। আপনাকে কিছু জিনিসে বিশ্বাস করতেই হবে— নিজের ক্ষমতা, গন্তব্য, জীবন, কর্ম। এ বিশ্বাস কোনোদিন আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমার জীবন বদলে দিয়েছে’। স্ট্যানফোর্ডের উদ্বোধনী বক্তব্যে।
নিজের কাজকে ভালোবাসুন…
--------------------------------------
‘আপনার কাজই আপনার জীবনের বড় অংশজুড়ে আছে। আর সত্যিকারভাবে সন্তুষ্টি পেতে হলে নিজের কাজগুলোকে বড় করে দেখতে হবে। আর এর জন্য নিজের কাজকে ভালোবাসতে হবে। যদি না পেয়ে থাকেন, খুঁজতে থাকুন। বসে থাকবেন না। যখন খুঁজে পাবেন, আপনার মনই তা বলে দেবে। আর মহান সম্পর্কগুলোর মতো দিন দিন সে কাজ আরও ভালো হতে থাকে। তাই বসে থাকবেন না, আপনার মনের মতো কাজ খুঁজে নিন।’
No comments