সর্বদা সুখী থাকার বিশটা সহজ উপায়

সর্বদা সুখী থাকার বিশটা সহজ উপায়......
সুখ কি? এ’ তো দেখা যায় না, ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না। এটা পুরোপুরি অনুভূতির বিষয়। একজন সুখী ও আশাবাদী মানুষ যে কোনো পরিস্থিতিতে সাহস ধরে রেখে নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার যোগ্যতা রাখেন। যে কোনো ক্ষেত্রেই পজেটিভ দিকটায় মনোনিবেশ করা সাফল্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বড় একটি ভূমিকা রাখে। তবে সবসময় নিজের ভেতর সুখ ধরে রাখাটাও বড় ধরণের একটা চ্যালেঞ্জ।
খুব সহজ কিছু উপায় যা পালন করলে আমরা সবাই সুখী থাকতে পারবো।
একজন সুখী ও আশাবাদী মানুষ যে কোনো পরিস্থিতিতে সাহস ধরে রেখে নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার যোগ্যতা রাখেন। যে কোনো ক্ষেত্রেই পজেটিভ দিকটায় মনোনিবেশ করা সাফল্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বড় একটি ভূমিকা রাখে। তবে সবসময় নিজের ভেতর সুখ ধরে রাখাটাও বড় ধরণের একটা চ্যালেঞ্জ।

১। ইতিবাচক চিন্তার অনুশীলন করুন: ইতিবাচক চিন্তা আপনার কাজকে যতখানি সামনে নিয়ে যেতে পারবে, আর কিছুই এতোখানি পারবে না। যদি আজ কোনো ব্যর্থতা আসে, তাহলে ভাববেন না, আপনি সবসময়ই ব্যর্থ। কাল সাফল্য অবশ্যই আসবে। কাজেই নিজের প্রতি ইতিবাচক চিন্তা ধরে রাখুন এবং সকল ক্ষেত্রে বাধার কথা মাথায় না রেখে সাফল্যের কথা ভাবুন। সে উদ্দেশ্যেই কাজ করুন।

২। নিজেকে পৃথিবীর সবচাইতে সুখী মানুষ মনে করুন-ভাবুন এবং নিজের মনমানসিকতা এমন ভাবে তৈরি করুন যে আপনি নিজেই নিজেকে ভাববেন যে আপনি পৃথিবীর সবচাইতে সুখী মানুষ। সুখী থাকতে সবচাইতে প্রয়োজনীয় জিনিস হল নিজেকে বিশ্বাস করুন কখনো নিজের সাথে কোণ ধরণের অন্যায় করবেন না।

৩। নিজেকে কখনো দোষ দেবেন না এবং অন্যকেও না। কখনো যদি কোনো ভুল করেও থাকেন তাহলে নিজেকে বুঝানোর চেষ্টা করুন যে ভুল হতেই পারে সামনে আর ভুল হবেনা। আর কখনো অযথা অন্যের উপর দোষ দেবেন না।

৪। হতাশ না হয়ে নিজের ভাগ্যকে বিশ্বাস করুন আমাদের জীবনে অনেক ধরনের শখ আল্লাদ থাকে, কিন্তু সব শখ কি কখনো পূরণ হয়? জীবনের সব শখ কখনোই পূরণ হয়না। তা নিয়ে হতাশ হওয়ার কোণ কারণ নেই। নিজের ভাগ্যের উপর সব ছেড়ে দিন। ভাবুন যে আপনি জীবনে যা যা পাবেন তা আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার।

৫। আজে বাজে চিন্তা ভাবনা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন কথায় আছে নিসঃকর্ম মস্তিস্ক শয়তানের কারখানা! তাই নিজেকে আজে বাজে চিন্তা ভাবনা থেকে দূরে রাখুন। জীবনে কষ্ট থাকবেই এর জন্য যে সারাক্ষণ কষ্ট আর বাজে চিন্তা নিয়ে পড়ে থাকবেন তা ঠিক নয়। তাই সব ধরণের বাজে চিন্তা থেকে দূরে থাকুন সুখী থাকবেন।

৬। ক্ষমাশীল হন। ক্ষমাশীল হওয়া জীবনের সবচাইতে বড় গুণ। যখন নিজের অপরাধ ও অন্নের অপরাধ ক্ষমা করে দিতে পারবেন তখন আপনি নিজেই অনুভব করতে পারবেন যে আপনি পৃথিবীর সবচাইতে সুখী মানুষ।

৭। সবাইকে সাথে নিয়ে সুখী থাকার চিন্তা করুন শুধু নিজেকে সুখী রাখলে হবেনা। সবাইকে সাথে নিয়ে সুখী হতে হবে। নিজের পরিবারেতো সুখী হতেই হবে এবং পাশাপাশি আপনি বিবাহিত হলে আপনার স্বামী/স্ত্রী, সন্তান সবাইকে নিয়েই ভালো থাকতে হবে। অনেক সময় যখন আপনার সাথের মানুষ গুলো ভালো থাকবে তখন আপনি নিজেও ভালো থাকবেন।

৮। শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকুন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাটা সবচেয়ে জরুরী। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন, বাইরের খাবার ত্যাগ করুন, মাঝে মাঝে জোরে নিঃশ্বাস নিন। আপনি নিজেই ভালো বুঝেন কি করলে আপনার শরীর ভালো থাকবে সুতরাং আপনি তাই করুন।

৯। মানুষকে সাহায্য করুন এবং উৎসাহ দিন আপনি কাউকে কখনো সাহায্য করলে নিজেই খুব ভালো অনুভব করবেন। সাহায্য যত বড়ই হোক অথবা ছোট, তা আপনাকে মানসিক ভাবে শান্তি দিবে। আপনার কাছের মানুষ গুলোকে যে কোনো কাজের জন্য উৎসাহী করুন। সবাই খুশি হবে আর আপনিও ভালো থাকবেন।

১০। কখনও সমস্যা এড়িয়ে চলবেন না। সমস্যা এড়িয়ে চলা কখনই সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে দিতে পারেনা। তারপরেও মাঝে মধ্যে কিছু সমস্যা এসে দাঁড়ায় যেগুলোর সমাধান আসলেই কঠিন। নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে হলেও তার সমাধানের চেষ্টা করুন। সমাধান শেষে এক ধরনের সুখ অনুভব করবেন।

১১। অপরের ব্যাপারে নাক গলাবেন না। অন্যের দিকে নজর না দিয়ে যখন শুধু নিজের কাজ করবেন তখন দেখবেন কি রকম মুক্ত আর সন্তুষ্ট বোধ করছেন। পরস্রীকাতরতা ত্যাগ করুন। তবে নিজের ভুল ত্রুটি শুধরে নেবার জন্য অন্যের সাথে নিজের কাজে তুলনা করতে পারেন।

১২। কাউকে নিজের সুখের উৎস বানাবেন না। আপনাকে ঘিরেই আপনার জীবন। অনেকেই আসবে যাবে কিন্তু নিজেকে সবচেয়ে বেশী মূল্যায়ন করুন। আপনার সুখী হবার জন্য অন্যের অনুমতির দরকার নেই। কাউকে এতে ভাগ বসাতে দিতে যাবেন না।

১৩। নেগেটিভ মানুষের সঙ্গ ত্যাগ করুন। যারা আপনাকে পেছনে টেনে ধরে আপনার খুত খুঁজে বেড়ায় এবং আপনার কাজের প্রতি নেতিবাচক চিন্তা বাড়িয়ে তোলে সেই সকল মানুষের সঙ্গ ত্যাগ করুন। নেতিবাচক মানুষ হতে দূরে থাকুন।

১৪। ক্ষমা করুন, ভুলে যান। অনেকে সামান্য ঘটনাকেও অনেক বড় করে ফেলেন। অনেকের সামান্য অপরাধও ক্ষমা করতে পারেন না। সুখী হতে চাইলে সব ময়লা গায়ে লাগতে দিবেন না। আর ক্ষমাশীল হোন। এবং অপ্রয়োজনীয় রাগ, উদ্বেগ ঝেড়ে ফেলুন।

১৫। ব্যয়াম এবং খাবারে নিয়ম মেনে চলা: নিয়মিত ব্যয়াম এবং খাবারে নিয়ম মেনে চললে শরীর থাকে ঝরঝরে। আর ঝরঝরে শরীর মনকে রাখে তরতাজা। ফলে কাজে আসে স্পৃহা। দিনে অন্তত পনের মিনিটের জন্য হলেও ব্যয়াম করা উচিত।

১৬। হাসুন বেশি: আমরা যখন হাসি, তখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসে। হাসলে সেরোটোনিন নামে এক ধরণের হরমোন নিঃসরন করে যা মানুষকে সুখী সুখী ভাব এনে দেয়। এধরণের অনুভূতি অনেক কঠিন কাজকেও সহজ করে দেয়।

১৭। পারসোনালি নিবেন না। সমালোচনার মুখে পরবেন অনেক সময়। তার থেকে শিক্ষা গ্রহন করুন। কিন্তু তা পারসোনাল এ্যাটাক বলে ধরে নিবেননা। আবার প্রশংসিতও হতে পারেন এতে আবার গলে যাবেননা। স্বাভাবিক ভাবনার টেন্ডেনসি বাড়ান।

১৮। প্রতিহিংসা। সুখী মানুষেরা প্রতিহিংসা পরায়ণ হয় না। বরং তারা সমাধানের পথ খুঁজে। আপনি অনেক কারণেই কষ্ট পেতে পারেন, কিন্তু তার প্রতিশোধ নিতে সামনের দিনগুলিকে বা আপনার ভবিষ্যতকে নষ্ট করতে পারেননা। ভালো মানুষ হোন এবং সুখী হোন।

১৯। ভালো শ্রোতা হোন: একজন ভালো শ্রোতাই পারেন সময়মত অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে। শুধু তাই নয়, ভালো শ্রোতা হওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল দ্রুত জ্ঞানার্জন করা যায়। অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করাও হয় এতে। এতে করে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। আত্মবিশ্বাস এবং জ্ঞান আপনার কাজে নিরাপত্তা এবং ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

২০। অতীতকে কখনোই ভবিষ্যত হিসেবে নেবেন না: অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হয়, তাকে বুকে ধারণ করে ভবিষ্যতকে নষ্ট করতে নেই। সেই ব্যক্তিই জীবনে সুখী হতে পারে, যে অতীত থেকে নিজ ভুলের শিক্ষা নিয়ে তা আবার দ্বিতীয়বার না করে এবং ভবিষ্যতকে এই শিক্ষার আলোকে উজ্জ্বল করে তোলে।
সুখী হতে চাইলেই তা হওয়া যায় না। অনেকে বলেন চাইলেই সুখী থাকা যায়। কিন্তু সুখ ব্যাপারটা আবার এত সহজ নয়। তবে সুখী কিভাবে থাকতে হয় তার জন্য কিছু জিনিষ শিখে নেয়া দরকার যদিনা আপনি মনে করেন আপনি এমনিতেই সুখী। সুখ এবং কমফোর্টের জন্য এগুলো মেনে চলতে পারেন। তা হলেই আপনিও পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সুখী ব্যাক্তি হয়েও যেতে পারেন।

No comments

Powered by Blogger.