একবার এক লোক পাহাড়ী অঞ্চলে


একবার এক লোক পাহাড়ী অঞ্চলে বেড়াতে গেল। ঘুরতে ঘুরতে সে একটি কাক দেখলো যার দুটি ডানাই কাটা ছিলো। কাকটির এই অবস্থা দেখে সে ভীষন দুঃখ পেয়ে মনে মনে ভাবলো, এটা নিশ্চয়ই কোনো দুষ্ট ছেলের কাজ। সে ভাবলো, ‘হায় আল্লাহ এই কাকটি এখন উড়বে কিভাবে? আর যদি সে তার খাবারই সংগ্রহ না করতে পারে তবে সে বাঁচবে কিভাবে?’

এসব যখন সে ভাবছিলো তার কিছুক্ষন পর সে দেখলো সে যায়গায় এক ঈগল উড়ে এলো যার ঠোঁটে ছিলো কিছু খাবার। খাবারগুলো সে কাকের সামনে ফেললো এবং সখাকথেকে উড়ে চলে গেল।

এই দৃশ্য দেখে সে অত্যন্ত অবাক হয়ে গেল। সে ভাবলো যে, ‘যদি এভাবেই আল্লাহ তার সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখনে তবে আমার এত কষ্ট করে কাজ করার দরকার কি? আমি আজ থেকে কোনো কাজ করবো না,তিনিই আমাকে খাওয়াবেন’।

সে কাজ করা বন্ধই করে দিলো। কিন্তু দুই তিনদিন পার হয়ে গেলেও সে কোনোখান থেকে কোনো সাহায্য পেল না। এর কারন জানতে সে একজন জ্ঞানী লোকের কাছে গেল। তিনি তাকে বললেন, ‘তুমি দুটি পাখি দেখেছিলে। একটা সেই আহত কাক,আরেকটা সেই ঈগল।তুমি কেন সেই কাকটিই হতে চাইলে? কেন তুমি সেই ঈগলটির মত হতে চাইলে না যে নিজের খাবারতো যোগার করেই,সাথে যারা না খেয়ে আছে তাদের মুখে খাবার তুলে দেয়?

গল্পের এই লোকটির মতই আমাদের চারপাশে অনেকেই আছেন যারা অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে বেচে থাকতে চায়।তারা ভুলে যায় যে নিজেকে সাহায্য করে না,আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন না। দুটো কাজের মধ্যে সহজ কাজটি করার জন্যে তারা নিজেরা একটা অজুহাত বানিয়ে ফেলতে ভীষন এক্সপার্ট। যখন আমরা নিজেরা নিজেদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু নিশ্চিত করতে পারবো ঠিক সেই মুহুর্তটি থেকেই নিজেদের ঈগলটির মত ভাবতে হবে।অন্যকে বেঁচে থাকার জন্যে সাহায্য করতে হবে।

বিশ্বাস করুন আমি পৃথিবী যত সুখী মানুষের কথা শুনেছি তাদের বেশির ভাগই নিজেদের সুখের ব্যাপারে একদমই ভাবতেন না,অন্যের দুঃখ কিভাবে কিছুটা হলেও কমানো যায় সেই কাজে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টাটা দিতেন।

No comments

Powered by Blogger.