প্রবিত্র রমজানে সূস্থ থাকতে খাওয়া-দাওয়া

প্রবিত্র রমজানে সূস্থ থাকতে খাওয়া-দাওয়া....

যে সব পুষ্টিকর খাবার যে খাবার গুলো সারাদিন রোজার পরে আপনাকে দিবে পরিপূর্ণ পুষ্টি এবং স্বাচ্ছন্দ্য। সেই সাথে আপনাকে সুস্থ রাখবে...জাস্ট এই নিয়ম মেনে খেলে আপনি কোন প্রকার শাররিক অসুস্থতায় ভুগবেন না আশা করি ...

রমজান মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস সকল মুসলমানদের জন্য। সারা বিশ্বের মুসলমানদের মাঝে প্রতিফলিত হবে একটি পবিত্র ছোঁয়া এবং সেই সাথে পরিবর্তন হবে খাবার এর ধরন এবং সময়সূচি। তাই আমরা আজকে জেনে নিবো রমজান সম্পর্কিত কিছু কথা যা না জানলেই না। চলুন জেনে নিই কী কী খাবার গ্রহণ ও কী কী খাবার বর্জন করা উচিত এই পবিত্র মাহে রমজান মাসে।
রমজান মাসে আমরা সারাদিন রোজা রেখে নানান রকম ইফতার করি | বুট, পেয়াজু , বেগুনি , জিলাপি , হালিম, অনেক মুখরোচক খাবার থাকে আমাদের ইফতারের প্লেটে | রোজার মাসে মনে হয় আমরা খবর প্রতিযোগিতা করি | কে কত খেতে বা রান্না করতে পারে |কিন্তু এই সব ভাজা পোড়া, গুরুপাক খাবার খেয়ে আমাদের কি হতে পারে? সারাদিন রোজা রেখে আমাদের পাকস্হলি খুব ক্ষুধার্ত ও দুর্বল থাকে | তারপর যদি এত রকম গুরুপাক খাবার একসাথে খাওয়া হয় তাহলে কি অবস্থা হবে? পেটের সমস্যা,মাথা ব্যাথা , কোষ্ঠকাঠিন্য , দুর্বলতা, অবসাদ , ulcers, acidity, হজমের সমস্যা,ইত্যাদি হবে রোযার নিত্য সঙ্গী | অনেকের ওজন ও বেড়ে যায় |রোজার মাস সংযমের মাস | খাওয়া থেকে শুরু করে ব্যায়াম , জীবন যাত্রা সব ই হতে হবে নিয়ম মত , সাধারণ, এবং পরিমিত | অনেকে মনে করেন ইফতারে ভাজা পোড়া না থাকলে ইফতার ই হবে না | কিন্তু একটু চিন্তা করেন তো ভাজা পোড়া এত বেশি খেলে কি হবে ? খাবার আমাদের জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ | এটি যদি ঠিক না থাকে তাহলে শারীরিক সমস্যা হতে বাধ্য |

কি ভাবে খাবার খাবেন?
ইফতার কি ভাবে খাবেন?
1) নিজেকে ইফতার এর সামনে সংযত করুন | আস্তে আস্তে খাওয়া শুরু করুন |

2) প্রথমে পানি বা শরবত খান | তারপর খোরমা বা খেজুর খান | তারপর কাচা ছোলা খেয়ে নামাজ পড়তে চলে যান |

3) তারপর আস্তে আস্তে বাকি খাবার খান |

4) পুরা পেট ভরে না খেয়ে একটু ক্ষুধা রেখে খেতে হবে |

5) তারপর আধা ঘন্টা পর পানি খেতে হবে |

6) ইফতারের এক ঘন্টা পরে চা খেতে পারেন |
 
প্রতি বেলার খাবার কি ভাবে খাবেন?
1) সেহেরিতেও পরিমিত পরিমানে খান

2) সেহরীতেও খুব বেশি খাওয়া বা সেহরী না খাওয়া ঠিক না | সেহরী না খেলে শরীর দুর্বল হয়ে যাবে |

3) ইফতার, রাতের খাবার ও সেহেরী এই তিন বেলাই খাবার খাবেন|

4) কোনো বেলা খাবার খাওয়া বাদ দিবেন না| তাহলে দুর্বল হয়ে যেতে পারেন

5) রোজার মাসেও স্বাভাবিক সময়ের মতো ক্যালরি মেপে, পরিমিত পরিমানে খেতে হবে| 6) যার যার শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী স্বাভাবিক নিয়মে ক্যালোরির চাহিদা অনুযায়ী খাবার খেতে হবে

7) একবারে বেশি খাবার বা বেশি ক্যালোরিবহুল খাবার খাওয়া যাবে না, তাহলে ওজন বাড়তে পারে, পেটের সমস্যা,
গ্যাস্ট্রিক ইত্যাদি হতে পারে

8) প্রতিবেলার খাবার হতে হবে সহজপাচ্য, পরিমিত ও যার যার শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী

কি খাবেন, কি খাবেন না
1) ইফতারে খেজুর বা খোরমা অবশ্যই খাবেন | এতে আছে শর্করা , চিনি , sodium, calcium, magnesium, phosphorus, iron, copper, sulfur, manganese, silicon , chlorine,ফাইবার , যা সারাদিন রোযা রাখার পরে খুব ই দরকারী |

2) চিনি যুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে | এটা খুব তাড়া তাড়ি রক্তে চিনি র মাত্র বাড়িয়ে দেয়, ওজন বাড়ায় | চিনি কে বলুন বাই বাই |

3) সব মাসের মত সবজি ও ফল খেতে হবে নিয়ম মত | তা না হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হবে নিত্য সঙ্গী |

4) এই গরমে অন্তত ৮ গ্লাস পানি না খেলে হজম এর সমস্যা হবে |ইফতারের পর থেকে ঘুমাতে যাবার আগ পর্যন্ত পানি ,পানি আর পানি খাবেন একটু পর পর

5) ডাবের পানিও খেতে পারেন

6) সরবত খাওয়া ভালো, এতে পানিশুন্যতা হবে না| বিভিন্ন ফলের চিনি ছাড়া সরবত, লাচ্ছি, ইসবগুলের সরবত
ইত্যাদি খেতে পারেন|

7) খাদ্য তালিকায় সব গ্রুপের খাবার থাকতে হবে : আমিষ, শর্করা , ফ্যাট,ভিটামিন, দুধ , দই ,মিনারেলস , ফাইবার ইত্যাদি খেতে হবে নিয়ম মত |সুষম খাবার (balance diet) খেতে হবে |

8) অন্যান্য সময়ের মতই সাদা শর্করা কম খেয়ে লাল শর্করা বা complex carbohydrate (যেমন লাল আটা) বেশি খান

9) ফাইবার সম্দৃধ্য খাবার যেমন : লাল আটা , বাদাম ,বিনস, শস্য ,ছোলা, ডাল ইত্যাদি খেতে হবে | এগুলো হজম হয় আস্তে আস্তে তাই অনেক সময় পরে ক্ষুধা লাগে | রক্তে চিনির পরিমান তাড়া তাড়ি বাড়ে না |

10) সুষম খাবার : দুধ খেতে হবে প্রতিদিন

11) ইফতারে কাঁচা ছোলা খাওয়া ভালো | তবে তেল দিয়ে ভুনা করে খাওয়া ঠিক না

12) চা , কফি র মাত্রা কম হতে হবে | তা না হলে পানি শুন্যতা ,কোষ্ঠকাঠিন্য ,ঘুমের সমস্যা হতে পারে |
13) সেহরী তে দুধ সমদৃধ্য খাবার যেমন: oats, corn flakes ইত্যাদি খেলে আস্তে আস্তে হজম হয় | ক্ষুধা কম লাগে |

14) ভাজা পোড়া, গুরুপাক খাবার : যেমন : ছোলা ভুনা, পেয়াজু, বেগুনি, চপ, হালিম, বিরিয়ানি বাদ দিবেন | তবে ঘরে তৈরী হালিম খেতে পারেন|

15) ওজন কমাতে চাইলে শর্করা কম খেতে হবে, আমিষ ও সবজিকে বন্ধু বানিয়ে পেট ভরাতে হবে |

16) প্রতিবেলা মাংস না খেয়ে অন্তত এক বেলা মাছ খেতে চেষ্টা করুন |

17) সহজ পাচ্য খাবার , ঠান্ডা খাবার যেমন : দৈ, চিড়া খাবেন | তাহলে সারাদিন রোজা রাখা নাজুক পাকস্থলী শান্তিতে খাবার হজম করতে পারবে |

18) কোষ্ঠকাঠিন্যর দেশে যেতে না চাইলে ইসবগুল খেতে পারেন, দুধ বা জুস এর সাথে | এটা রাতে খেতে পারেন |

19) বেশি দুর্বল লাগলে ডাবের পানি বা saline খেতে পারেন ইফতারের পরে |

20) কোমল পানীয় ? এটা তো বিষ | ঘুমের সমস্যা ,acidity, ulsers, ইত্যাদি র কারণ | এটাও সারাজীবনের জন্য বাই বাই |

21) diebetis এর রোগীরা পরিমিত পরিমানে, ডাক্তার এর নির্দেশ মত খাবেন |

নমুনা ইফতার এবং সেহেরিঃ কিছু খাওয়ারের চার্ট
সহজপাচ্য, নরম, সুষম খাবার খাদ্য তালিকায় থাকলেই রোজা রেখেও সুস্থ্য থাকা যাবে | নিচের যেকোনো টি ইফতারে বা সেহেরিতে খেতে পারেন |
 
ইফতার মেনু :
1) লাল আটার রুটি, মুরগির মাংস, সবজি, কাঁচা ছোলা | সাথে সালাদ, ফলের সালাদ বা ফলের চাট যেকোনো একটি |

2) ভাত, মাছ বা মুরগির মাংস, সবজি, কাঁচা ছোলা | সাথে সালাদ, ফলের সালাদ বা ফলের চাট যেকোনো একটি |

3) নুডুলস : মাছ বা মুরগির মাংস বা ডিম, সবজি দিয়ে রান্না করা ,কাঁচা ছোলা| সাথে সালাদ, ফলের সালাদ বা ফলের চাট যেকোনো একটি |

4) নরম খিচুড়ি, মাছ বা মুরগির মাংস বা ডিম, সবজি | সাথে সালাদ, ফলের সালাদ বা ফলের চাট যেকোনো একটি 5) চিড়া, দই , ফলের সালাদ বা ফলের চাট যেকোনো একটি, কাঁচা ছোলা |
ইফতারের খাবারে লক্ষ্য রাখবেন :

1) মিষ্টি খাবার খুব খেতে ইচ্ছা করলে মাঝে মাঝে খেতে পারেন, অল্প পরিমানে | তবে ওজন কমাতে চাইলে বা ফিট থাকতে চাইলে প্রতিদিন খাওয়া যাবে না |

2) খেজুর প্রতিদিন অবশ্যই খাবেন |

3) চিনি ছাড়া শরবত খাওয়াই ভালো |

4) কাঁচা ছোলার সাথে আদা কুচি , ধনে পাতা, লেবুর রস ,কাঁচা মরিচ বা কাঁচা ছোলা সালাদের সাথে খেতে পারেন |

সেহেরির মেনু :
 1) কর্ন ফ্লেক্স বা রুটি , দুধ ,কাঠ বাদাম (almond) , ফল যে কোনো একটি |

2) oats বা রুটি ,দুধ , কাঠ বাদাম , ফল যে কোনো একটি |

3) চিড়া, দই , কাঠ বাদাম এবং ফল যে কোনো একটি |

4) ভাত, মাছ বা মুরগির মাংস, সবজি, ডাল, সালাদ, এবং ফল যে কোনো একটি | এক গ্লাস দুধ বা টক দই |

5) লাল আটার রুটি, মুরগির মাংস, সবজি,ডাল, সালাদ, এবং ফল যে কোনো একটি | এক গ্লাস দুধ বা টক দই

রাতের খাবার:
1) রাতের খাবার খাবেন আগের মতই, তবে পরিমিত পরিমানে |

2) ফিট থাকতে চাইলে বা ওজন কমাতে চাইলে ভাত খাবেন না |

3) রাতের খাবার যতটুকু সম্ভব হালকা হতে হবে |খাওয়ার সাথে সাথে শুবেন না |

4) ইফতার হালকা করে রাতে একটু ভারী খাবার খেতে পারেন |

5) তবে ইফতারে বেশি খেয়ে রাতে কম খাওয়াই ভালো |

6) রাতে একেবারে কিছু না খাওয়া ঠিক না | কম করে হলে ও একগ্লাস দুধ বা জুস খেতে পারেন |

রোজায় খাবার ও অন্যান্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ -
খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের কারণে অনেক সমস্যা হয়। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবদুল জলিল চৌধুরী।

প্রশ্ন : রোজা এলে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের দুই রকম পরিবর্তন হয়। একটা হচ্ছে সময়ে। আগে সকালের নাশতা করতাম, দুপুরে খেতাম এবং রাতে খেতাম। তবে রোজার সময় এই সময় পরিবর্তন হয়ে যায়। এতে করে কোনো সমস্যা হয় কি না? আরেকটি হচ্ছে খাদ্যাভ্যাসের গুণগত মান বা ধরনের পরিবর্তন হয়, ইফতার মানেই তৈলাক্ত খাবারের প্রবণতা। এতে অনেকেরই্ গ্যাসট্রিকের সমস্যা হয় এই বিষয়ে আপনার পরামর্শ কী?
উত্তর :
আপনি যেসব পরিবর্তনের কথা বললেন, তার সঙ্গে আরেকটি পরিবর্তন আছে। এখন তো গরমের দিন, রোজার সময় কিন্তু অনেক লম্বা দিন, প্রায় ১২ ঘণ্টা, আবার শীতকালে সময়টা কমে আসবে এটাও একটা পরিবর্তন। এ ছাড়া খাদ্যাভাসের পরিবর্তনের কথা আপনি বলেছেন। একটা বিষয় আছে কেন যেন ক্ষুধা বেশি লাগলে মানুষের ঝাল, ভাজা-পোড়ার দিকে বেশি আকর্ষণ থাকে। সুতরাং স্বাভাবিকভাবে এই ঐতিহ্য গড়ে উঠছে যে ঝাল, ভাজাপোড়া খায়। ঝাল, ভাজাপোড়া খাবার কোথায় প্রস্তুত করে এটি একটি প্রয়োজনীয় বিষয়। কারণ রোজার সময় দোকানি বিভিন্নভাবে ইফতার তৈরি করেন। সেখানে কী ধরনের তেল বা মসলা ব্যবহার করা হয়, আমরা জানি না। আমরা ঠিকমতো জানি না যে কী খাচ্ছি।
যেহেতু আমরা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকি, তখন যদি আমরা ঝাল, ভাজাপোড়া খাই, এর ফলে পাকস্থলীতে একধরনের এসিড-জাতীয় রস নিঃসরণ হয়। যদি আমরা ঘন ঘন খাই, এসিডের সঙ্গে সে খাদ্য মিশে গিয়ে এটা নিউক্লিয়াস হয়ে যায়। তবে যখন আমরা ক্ষুধার্ত থাকি, তখন শুধু এসিডই থাকে। আর কোনো খাদ্য সেখানে থাকে না। এই এসিডের সঙ্গে যখন ঝাল, ভাজাপোড়া মিশবে, তখন এমনি জ্বালাপোড়া হবে। যাদের গ্যাসট্রিক আছে, রিফ্লাক্স একটি অসুখ আছে গ্যাসট্রিকের মতোই বুক জ্বালাপোড়া করে, তাদের এই সমস্যাগুলো বাড়বে।
আগে তো দিনের বেলায় কয়েকবার খাওয়া হতো এখন সারা দিন আমরা না খেয়ে থাকি। না খেয়ে থাকার কারণে যাদের শরীরে আলসার বা গ্যাসট্রিক আছে সেগুলো বাড়ছে।

প্রশ্ন : এ সময় কী ধরনের খাবার খাদ্যতালিকায় থাকতে হয়?
উত্তর :
প্রথম কথা হলো, আমরা রোজার সময় না খেয়ে থাকি। অনেকে মনে করে যে ওজন কমে। আসলে উল্টো হয় অনেকের। রোজার সময় অনেক সময় বেশি খাওয়া হয়। কেননা ইফতারের পর যা আমরা খাই, এরপর আবার সেহরির সময় অনেকে বেশি খাই, তাতে ওজন বেড়ে যাচ্ছে। সেটা হওয়া ঠিক না।
একটা জিনিস করা উচিত, যেহেতু আমরা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকি রক্তের শর্করার পরিমাণ কমে যায়। সে জন্য রোজার সময়, রোজার শেষের দিকে একটু মাথা ঝিম ঝিম করা এগুলো হয়। এ সময় শর্করা যাতে বাড়ে এ সমস্ত খাবার দিয়ে যদি ইফতার করি তাহলে পুষ্টিটা হলো। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো খেজুর। ধর্মেও আছে খেজুর ভালো জিনিস। তবে ডায়াবেটিস থাকলে সেটা ভিন্ন কথা। তারপর ঘরে বানানো শরবত খাই লেবু-চিনি দিয়ে। এটিও একটি পুষ্টিকর খাবার। এরপর চিঁড়া, দুধ, দই-কলা এগুলো দিয়ে ইফতার করলে আমার তো ভালো হয়। এ ধরনের সহজ পাচ্য জিনিস যেখানে ভাজাপোড়া কম এগুলো দিয়ে যদি খাবার শুরু করি, আমার মনে হয় ইফতার ভালো হয়। তারপর যখন পেটটা একটু ভরা হলো, তখন নামাজ পড়ে বিরতি নিয়ে যদি ভাজাপোড়া খাই তাহলে মনে হয় ভালো হয়।

প্রশ্ন : ফলের বিষয়টি বলুন।
উত্তর
: এখন তো ফলের মৌসুম। ডায়াবেটিস না থাকলে যেকোনো ফল খেতে পারেন। ফলে শর্করা আছে, কার্বোহাইড্রেট আছে এবং ফল খেলেও শর্করার পরিমাণ বাড়ে। তবে কথা হলো ইফতারের সময় যেন একেবারে ভূরিভোজ না হয়। এটা শরীরে কোনো ওষুধ থাক বা না থাক, সবার জন্যই পরিমিত খাওয়া উচিত। পরিমিত, সহজপাচ্য এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।

প্রশ্ন : সেহরির সময় নিয়ে একটু বলুন।
উত্তর :
বাংলাদেশে কোনো কোনো জায়গায় দেখবেন ওরা বিস্কুট খায় আর চা খায়, দুধ খায়। এটা ঠিক না। আবার কেউ কেউ মনে করে, সেহরির সময় খাবারটা একেবারে স্টক করে নেব। এটি স্টক করার জিনিস নয়। একটি পরিমাণে খেতে হবে। একটি বিষয় লক্ষ রাখতে হবে, যেহেতু আমাদের অনেকক্ষণ ধরে না খেয়ে থাকতে হবে, এমন খাবার খেতে হবে যেটা পাকস্থলীতে অনেকক্ষণ থাকে। যেমন আপনি যদি মিষ্টি খান কতগুলো সেটা বেশিক্ষণ পেটে থাকবে না। এমনকি যদি সেহরির সময় কতগুলো খেজুর খান, সেটিও বেশিক্ষণ থাকবে না। দুধ-কলা খেলে বেশিক্ষণ থাকবে না। শুধু সেহরির সময় চর্বিজাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমন : মাংস, মাছ, ডিম। চর্বিজাতীয় খাবার খেলে পাকস্থলীর সংকোচন প্রসারণ কম হয়। খাবারটা পাকস্থলীতে অনেকক্ষণ থাকে। সেটা ধীরে ধীরে হজম হবে, অনেকক্ষণ থাকবে। সে জন্য সেহরির সময় পরিমাণমতো খাবেন। ওজন বেশি থাকলে কম খাবেন, হালকা থাকলে বেশি খাবেন। সুতরাং সেহরির সময় মিষ্টি পরিহার করা উচিত। আর যার যে ধরনের পছন্দ, সে অনুযায়ী মাংস খেতে পারি। যদি অন্য রোগ না থাকে। তাহলে এগুলো যদি আমরা সেহরির সময় খাই মনে হয় উপকার হবে।

No comments

Powered by Blogger.